এই যে এত এত মুভি ইন্টারনেট থেকে ফ্রি তে ডাউনলোড করছেন - কখনো ভেবে দেখেছেন কি মুভি গুলো আসলে কে আপলোড করছে বা কোত্থেকে আসছে?? - Technology

Breaking

Thursday, October 19, 2017

এই যে এত এত মুভি ইন্টারনেট থেকে ফ্রি তে ডাউনলোড করছেন - কখনো ভেবে দেখেছেন কি মুভি গুলো আসলে কে আপলোড করছে বা কোত্থেকে আসছে??

এই যে এত এত মুভি ইন্টারনেট থেকে ফ্রি তে ডাউনলোড করছেন - কখনো ভেবে দেখেছেন কি মুভি গুলো আসলে কে আপলোড করছে বা কোত্থেকে আসছে??
.
আসুন জেনে নেই এর ইতিকথা ---
.
অনলাইন দুনিয়ায় যত যা কিছু পাইরেটেড হয় [মুভি, গান, গেইমস, সফটওয়্যার, ইবুক, ক্রাকস ইত্যাদি], সব করে ওয়ারেজরা।
.
Software এর ware থেকে warez শব্দটি এসেছে। ওয়ারেজ তাদেরকে বলা হয় যারা কপিরাইট আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মূল প্রডাক্টটি এনকোড করে অনলাইনে ছেড়ে দেয়। ওয়ারেজ একটা সংঘবদ্ধ পাইরেসি গ্রুপ।
.
পৃথিবীতে প্রায় শ খানেক ওয়ারেজ গ্রুপ আছে। এগুলো আন্ডারগ্রাউন্ড গ্রুপ। ডার্কনেটের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এক একটা ডার্কনেটের সিকিউরিটি বিভাগে অসম্ভব প্রতিভাবান সব হ্যাকার এবং প্রোগ্রামাররা কাজ করেন। কারন এই নেটওয়ার্ক ধরতে বিশ্বের বাঘা বাঘা সব গোয়েন্দাবাহিনী সদা তৎপর থাকে।
.
তো ওয়োরেজরা কিন্তু আপনার আমার জন্য মুভি রিলিজ করে না। করে যার যার গ্রুপের জন্য। এবং এই রিলিজের জন্য বেশ কিছু ধাপ, প্রক্রিয়া ও খুব পরিকল্পিত কিছু কাজ করা হয়। পুরো ব্যাপারটিই এতটাই স্মার্ট যে জানতে পারলে অবাক হয়ে যেতে হয়।
.
প্রশ্ন জাগতে পারে, মুভি পাইরেট করে ফ্রি তে ছেড়ে ওয়ারেজদের লাভ কি? লাভ হচ্ছে ট্রাফিক। নিউজ পোর্টালগুলোর পরে পৃথিবীতে সবচাইতে বেশী ট্রাফিক থাকে ওয়ারেজ সাইটগুলোর। ট্রাফিক সংখ্যা আতঁকে উঠার মতো। তাদের লাভ এই ট্রাফিক। কারন এটা দেখিয়ে তারা মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের বিজ্ঞাপন পায় তাদের সাইটে।
.
কিছু কিছু ওয়ারেজ গ্রুপ ’জিরো ডে’ মুভি রিলিজের জন্য বিখ্যাত। মানে, একটা সিনেমা যেদিন হলে রিলিজ হয়, ঠিক ঐদিনই ঐ সিনেমাটা তাদের গ্রুপে চলে আসে। মাঝে মাঝে রিলিজের আগেও আসে। (যেমন: আমেরিকান পাই মুভিটি নাকি হলে রিলিজ হওয়ারাও দুই মাস আগে মূল প্রিন্টটি ওয়ারেজ গ্রুপ ছেড়ে দেয়। চিন্তা করুন, দুই মাস!!)
.
মোটা দাগে পাইরেসির পদ্ধতিটা হলো, প্রথমে একটা মুভি এনকোড করে সেটাকে ওয়ারেজদের নিজস্ব সার্ভারে আপলোড করে রাখা হয়। তারপর সেটা অটো ডিকোড করে পিটুপি (পিয়ার টু পিয়ার) ফাইল শেয়ারিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে গ্রুপের ভেতর ছড়িয়ে দেয়া হয়। এরপর সেটাকে নামিয়ে কপি করে মেটা ডাটা (Meta Data) বদলিয়ে আবার আপ করা হয়, তারপর আবার নামিয়ে কপি করে আবার আরেকটা সাইটে আপ করা হয়। এমনটা করা হয় যাতে করে কেউ অরিজিনাল মুভি ফাইলটা ট্রেস করতে না পারে। পুরো ব্যাপারটিই খুব দ্রুততার সাথে করা হয়। এভাবেই শেষপর্যন্ত এগুলো মেগাআপলোডের মতো ফাইল শেয়ারিং ওয়েবসবাইট আর টরেন্ট সাইটগুলোতে আসে।
.
আমরা সেখানে থেকেই নামাই। সুতরাং, আমরা হচ্ছি ওয়ারেজদের এন্ড ইউজার। ওয়ারেজরা নিজেদের ভেতর এফটিপি (File Transfer Protocol) দিয়েও পাইরেটেড পণ্য আদান প্রদান করে।
ওয়োরেজ গ্রুপে তাদের নিজস্ব কোডেকও ফ্রিতে পাওয়া যায় এবং বেশীরভাগ সময়ই সফটওয়্যার কোম্পানির বানানো বানিজ্যিক কোডেকের চাইতে তাদের কোডেকগুলো হয় অনেক বেশী কার্যকর ও জনপ্রিয় (যেমন Xvid এবং x264 কোডেক)। জনশ্রুতী আছে, কোডেকের জগতের বিস্ময়, বিখ্যাত Matroska, [ভিডিও ফাইল এক্সটেনশান .mkv] মাল্টিমিডিয়া কন্টেইনার কোডেক সর্বপ্রথম রাশিয়ান একটা ওয়ারেজ গ্রুপ থেকেই রিলিজ হয়।
.
যে কেউ চাইলেই কোন ওয়ারেজ গ্রুপের মেম্বার হতে পারবে না। এইজন্য প্রফেশনাল এনকোডার হতে হয়, অনেক রকম ব্যাকগ্রাউন্প চেক করা হয় সিকিউরিটি ইস্যুর কারনে। মুভি নামানোর সময় খেয়াল করলে দেখা যাবে মুভির নামের সাথে কোডেকের নাম, মুক্তির সাল, প্রিন্ট কোয়ালিটি এবং কোডারের নাম উল্লেখ করা থাকে। এটা বাধ্যতামূলক। কোন ওয়ারেজ যদি এই ইনফোগুলো না দেন তাহলে তার এনকোডিংকে ডিসকোয়ালিফাই করা হয়।
.
[যেমন:47 Ronin 2013 WEBRip x264 AC3-FooKaS. এখানে মুভি নাম হচ্ছে: 47 Ronin মুক্তির সাল 2013 প্রিন্ট কোয়ালিটি WEBRip কোডেকের নাম x264 AC3 এবং কোডারের নাম FooKaS]
একটা ওয়ারেজ গ্রুপ বিভিন্ন প্রিন্ট ফরম্যাটে এক একটা মুভি রিলিজ করে। মুভি নামানোর সময় যে ক্যাম রিপ, ওয়েব রিপ লেখা দেখা যায়, এগুলা সেই জিনিস।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Responsive Ads Here